শিশুদের জন্য মায়ের দুধই সর্বোত্তম!! গবেষণা বলছে
পৃথিবীতে প্রতিটি নবজীবনের জন্য, তা উদ্ভিদ হোক বা প্রাণীই হোক, খাবার মজুদ করা থাকে এবং তা দিয়েই নবজাতকের পুষ্টি ও বৃদ্ধি হয়। উদ্ভিদের প্রতিটি বীজে অঙ্কুরের সাথে ফলের বিরাট অংশ জুড়ে থাকে তার প্রাথমিক খাবার। অঙ্কুরোদগম হলে এই খাবার খেয়েই শিশুগাছটি প্রকৃতিতে নিজের জায়গা করে নেয় এবং তারপর প্রকৃতির আলো, বাতাস, মাটি, পানি থেকে খাবার সংগ্রহ করে। কোনো বীজ ফল থেকে শুধু অঙ্কুরটি আলাদা করে রোপণ করলে তা বাঁচে না। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বেলায় নবজাতকের খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ।সৃষ্টির আদিকাল থেকে চলে আসছে এ নিয়ম। মায়ের কোলজুড়ে যে ফুটফুটে ছোট চাঁদের কণার মতো শিশুটির জন্ম হয়, তাকে বাঁচিয়ে রাখঅর জন্য ও তার দেহ-মনের যথাযথ বৃদ্ধি, পুষ্টি ও বিকাশের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হচ্ছে মাতৃস্তন।
তাই বলা হয়ে থাকে শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই। শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব দান। আর এ দান থেকে আমরা কোনোভাবেই তাকে বঞ্চিত করতে পারি না। নানা রকম মিথ্যা প্রচারণা ও প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে শিশুর প্রথম ও প্রধান অধিকার থেকে বঞ্চিত করা রীতিমতো অন্যায়। মায়ের দুধ যেখানে সহজলভ্য সেখানে আমরা তার মুখে তুলে দিচ্ছি বাজারজাত কৃত্রিম দুধ। মায়ের দুধের উপকারিতা সবাই আমরা যতটুকু জানি বা বলছি তার চেয়েও বেশি। প্রায়ই এই গুণাগুণ আমরা শুনছি। প্রয়োজন এটাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে মায়েদের তা কার্যকর করা। যদিও আমরা জানি তবুও এর কতগুলো গুণাবলি আবার উল্লেখ করছি: মায়ের দুধ- নিরাপদ, পরিষ্কার, সহজলভ্য ও সঠিক তাপমাত্রায় পাওয়া যায়।
একটি শিশুর স্বাভাবিক সুস্থ জীবনযাপন, শারীরিক গঠনের জন্য যা যা প্রয়োজন, শারীরিক গঠনের জন্য যা যা প্রয়োজন , তার সবটুকুই মায়ের দুধের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। বিশেষ করে শিশুর পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত। মায়ের দুধের ভেতরে রোগ প্রতিরোধক রয়েছে, যেগুলো শিশুর রোগ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে ডায়রিয়অ না হতে সাহায্য করে,এমনকি ফুসফুস ও শ্বাস রোগের প্রতিরোধ করে। এই কার্যকারিতা বাজারের কোনো দুধের ভেতরে পাওয়া যায় না। মায়ের বুকের দুধ ছোট শিশু অতি সহজে হজম করতে পারে।শালদুধকে শিশুর প্রথম টিকা বলা যায়। তাই জন্মের পরপরই শিশুকে বুকের প্রথম শালদুধ খাওয়ানো উচিত। মায়ের দুধ পান করলে মা ও শিশুর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিশুর মায়ের দুধ চুষে পান করে বিধায় শিশুর দাঁত উঠতে এবং চোয়াল শক্ত হতে সাহায্য করে। এটা তৈরি অবস্থায় পাওয়া পাওয়া যায় বিধায় ঝামেলা ও জীবাণুমুক্ত। মায়ের দুধ পানকারী শিশুর অ্যালার্জি ও হাঁপানি রোগের আশঙ্কা তুলনামূলক খুবই কম। মায়ের দুধ পান করলে রোগ প্রতিষেধক টিকা যথাযথ কার্যকরী হয়। শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুকে মায়ের স্তন ক্যান্সার ও জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বহুলাংশে কমে যায়। শিশুকে মায়ের দুধ পান করানোর জন্য কোনো বাড়তি খরছের প্রয়োজন হয় না। মায়ের দুধের ভেতরে টাউরিন নামক একটি উপাদান আছে, যা শিশুর মস্তিষ্কের কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মায়ের দুধ খেয়ে বড় হওয়া শিশু তুলনামূলক অধিক কুদ্ধিমান হয়।
Post a Comment